ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। করোনাভাইরাসই যখন পারে নাই, তবে আর কেউ পারবে না। এটাই আমার বিশ্বাস। আমরা বিশ্বমর্যাদা পেয়েছি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে। এখন আর বাংলাদেশকে কেউ অবহেলার চোখে দেখতে পারবে না। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে কাজ করছে সরকার।’
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ এনএসটি ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
২০০৮ সালে থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি নির্বাচনে বিজয় অর্জন করে টানা সরকারে থাকায় উন্নয়নটা সম্ভব হয়েছে বলে এ সময় মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবো। আমি সব সময় চাই মানবকল্যাণে কাজ করতে। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। আমরা প্ল্যান করে দিয়ে যাচ্ছি। ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করে ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছিলাম যে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে, সেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছি। এ কারণে আজ কিন্তু উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি ঠিক সময় মতো। আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিয়ে গেলাম। এর ওপর ভিত্তি করে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে উন্নয়নের যাত্রা শুরু করতে হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইতোমধ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এখানেই থেমে নেই, আমরা ২১০০ সাল ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। কারণ, বাংলাদেশে একটা বদ্বীপ। এই বদ্বীপ অঞ্চলে একদিকে যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করা, মানুষকে রক্ষা করা, অপরদিকে আমাদের উন্নয়নের গতি ধারাকে অব্যাহত রাখা। এই ভূখণ্ডটাকে এমনভাবে তৈরি করে দেওয়া যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায়। সেই লক্ষ্য নিয়েই ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করে সেটা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। কাজেই আমি মনে করি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে সামরিক শাসকরা ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য দেশের যুব সমাজ, ছাত্র-শিক্ষক সবার ওপরেই তারা যেমন অত্যাচার করেছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। আমরা দেখেছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্ত্রের ঝনঝনানি, বোমা-বারুদ, মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া, অর্থ তুলে দেওয়া, তাদের বিপথে নিয়ে যাওয়া এবং তাদের ব্যবহার করা।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে শিক্ষার একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। যদিও করোনাভাইরাস আমাদের আরেকটা সমস্যা সৃষ্টি করে দিয়েছে। প্রায় এক বছরের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছে, এটা মানুষের জীবনকে সুরক্ষিত করার জন্যই করা হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে আমরা ভ্যাকসিন শুরু করেছি। টিকা দেওয়ার কর্মসূচিতে শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রাইমারি থেকে শুরু করে একেবারে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। দেওয়া শেষ হলে মার্চ মাসের শেষদিকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সক্ষম হবো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাকে খুব গুরুত্ব দিয়েছি। তবে ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন অবাক হয়ে দেখলাম বিজ্ঞানের জন্য কোনও বরাদ্দ ছিল না। গবেষণার জন্য কোনও বরাদ্দ ছিল না। এমনকি শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাপী আমরা যদি দেখি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অগ্রগতি সাধন করার একটা উপায়। গবেষণার ছাড়া বা বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষা ছাড়া কীভাবে একটা জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে? বিজ্ঞানের যুগে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার করার পদক্ষেপ নিই। আমরা শিক্ষাকে বহুমুখী করা এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। সেই লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষার প্রসারে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ১৮টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চিন্তাভাবনা আছে আমাদের। সেখানে আমরা জায়গা দেখছি। ওই অঞ্চলটা আমরা আরও উন্নত করতে চাই। সব বিভাগীয় শহরে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার করে দেবো।’ সূত্র:বাংলাট্রিবিউন।
ভয়েস/জেইউ।
Leave a Reply